অভিজিৎ হাজরা: ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক দল গুলির প্রচার তুঙ্গে।বন দফতরের নির্দেশকে কার্যত বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠি দেখিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তাদের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে গাছে গাছে পেরেক সেঁটে নির্বাচনী ফ্লেক্স টাঙিয়েছে। এছাড়াও বৎসরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পূজা কমিটি তাদের পূজা অনুষ্ঠান,অন্যান্য অনুষ্ঠানে তাদের প্রচার,ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান,নাসিং হোম,প্যাথলজি সেন্টার,পলিক্লিনিক সেন্টার, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তাদের প্রচারে গাছে গাছে পেরেক সেঁটে ফ্লেক্স,হোডিং টাঙিয়ে রেখেছে। দেখা যাচ্ছে পেরেক সাঁটা গাছ গুলো আস্তে আস্তে মরে যাচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে গাছ বাঁচানোর বার্তা নিয়ে সচেতনতা শিবির অনুষ্ঠিত হল আমতার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
গাছ ধ্বংসের ফলে পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে। নগরোন্নয়নের জন্য গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চোরা পথে গাছ কেটে ফেলছে। মানুষের অমানবিক অত্যাচারে গাছ মরে যাচ্ছে।এর ফলে পরিবেশে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। এই কারণে মানুষ নানান দুরারোগ্য ব্যাধির শিকার হচ্ছে। ছোট বেলা থেকেই গাছের প্রয়োজন, গাছের গুরুত্ব,গাছ কে ভালোবাসা,গাছ রোপণ ও গাছ কে বাঁচানোর জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কচি কাঁচা পড়ুয়াদের সচেতনতার ক্লাসের ব্যবস্থা করল গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার আমতা ১ নং ব্লকের অন্তর্গত সোনামুই সাবালয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরষ্কার প্রাপ্ত অরুণ কুমার পাত্র। এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র বলেন, ” গাছ আমাদের জীবন,পরিবেশে গাছের প্রয়োজন ও গুরুত্ব বোঝাতে বিদ্যালয়ের কচি কাঁচা পড়ুয়াদের আলাদা করে ক্লাস নেওয়ার আয়োজন করেছি। অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে গাছের প্রতিটি অংশ দেখিয়ে পড়ুয়াদের বোঝানো হচ্ছে।কচি কাঁচা পড়ুয়ারা অনুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে গাছের বিভিন্ন অংশ গুলির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।আর উৎসাহ ও বাড়ছে পড়ুয়াদের মধ্যে ” । প্রধান শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র বিদ্যালয়ের কচি কাঁচা পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ আমরা জানি গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়,ভূমিক্ষয় রোধ করে, পাখিদের থাকার জায়গা দেয়,প্রচন্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতে পথচারীরা রাস্তার পাশে থাকা গাছের তলায় বিশ্রাম নেয়। গাছ থেকে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি হয়,যা আমাদের কাজে লাগে।তাই আমরা আজ সকলে মিলে শপথ নেব,অযথা গাছ কেটে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করবো না।আমরা বাড়ির আশেপাশে,রাস্তার পাশে গাছ বসিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবো।আমরা নিজেরা গাছ কাটবো না , অন্যদেরও গাছ কাটতে দেব না। গাছের গায়ে পেরেক সেঁটে প্রচারে বাধা দেব।গাছ বাঁচানোর বার্তা আমরা দিকে দিকে ছড়িয়ে দেব।’তিনি আরও বলেন,’পাঠ গ্ৰহণ করে এই বিদ্যালয়ের কচি কাঁচা পড়ুয়ারা বুঝতে পারল এই সকল উপকারের জন্য গাছ আমাদের প্রাণ।তাই গাছকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের মহান কর্তব্য ‘ । সোনামুই সাবালয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এহেন ক্লাসের ব্যবস্থা করার জন্য বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিভাবক -অভিভাবিকা সহ গ্ৰামবাসীরা প্রধান শিক্ষকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। –