এত স্থানের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই এমন স্থান যেখানে একই জেলাতে পাঁচটি সতীপীঠ রয়েছে। লাল মাটির দেশ বীরভূমকে বলা চলে মা কালীর চারণভূমি। কংকালীতলা, বক্রেশ্বর , নলাটেশ্বরী , ফুল্লরা , নন্দিকেশ্বরী এই পাঁচটি সতীপীঠ রয়েছে বীরভূমে।একমাত্র বীরভূমেই পাঁচটি সতীপীঠ রয়েছে।দক্ষযজ্ঞের আগুনে আত্মঘাতী হয়েছিলেন সতী।যার ফলে দেবী সতীর দেহ ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়।মহাদেবের অমতে দক্ষ রাজাকে বিয়ে করেছিলেন দেবী সতী। রেগে গিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন দক্ষরাজা। সেই যজ্ঞের আগুনে আত্মঘাতী হন সতী। সেই ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন দেবাদিদেব। তাঁর এই প্রলয় নৃত্য দেখে ভয় পেয়ে যান সকলে। ভগবান বিষ্ণু পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার থেকে বাঁচানোর জন্যে পাঠিয়ে দেন সুদর্শন চক্র। যার ফলে দেবী সতীর দেহ ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। সেই সব কটি জায়গাকে সতীপীঠ বলা হয়। সতীর প্রত্যেকটি পীঠ হিন্দু ধর্মে পরম পবিত্র বলে মানা হয়।তবে মায়ের ইচ্ছা অনুসারে প্রতি ১৯-২০ বছর অন্তর একবার করে শুকিয়ে যায় কুণ্ডটি। আর ঠিক সেই সময় যেকোনও কারণেই হোক বন্ধ হয়ে যায় মণিকর্ণিকা ঘাটও। আবার পুজো পাঠের পরে রাতারাতি জলে ভরে যায় কুণ্ডে।৫১ সতী পীঠের অন্যতম বীরভূমের বক্রেশ্বর। ঋষি অষ্টবক্র মুনির নামানুসারে এই জায়গার নাম হয় বক্রেশ্বর। সতীর দুই ভ্রু-র মধ্যস্থল অর্থাৎ মন পড়েছিল এখানে। মা এখানে মহিষমর্দিনী দুর্গা রূপে পুজিত হন। তাই প্রতি বছর এখানে ধুমধাম করে দুর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী, একদিন কোহল মুনি বেদ পাঠ করছিলেন, সেই সময়ে তাঁর সামনে বসে পাঠ শুনছিলেন তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী গার্গী। সেই সময় হঠাৎই গার্গীর গর্ভের সন্তান পেটের ভেতর থেকে মুনির বেদ পাঠে ভুল ধরেন এবং তাতেই রেগে গিয়ে স্ত্রীর গর্ভের সন্তানকে অভিশাপ দেন তিনি। এরপর গার্গী, সন্তান প্রসব করলে তার আট অঙ্গ বাঁকা হয়। সেই সন্তানই পরে হয় অষ্টবক্র মুনি।এই অষ্টবক্র মুনি এই জায়গায় হাজার হাজার বছর তপস্যা করে মহাদেবের দর্শন পেয়েছিলেন। মহাদেবের নির্দেশমতো ৮ জায়গায় মাটি খুঁড়ে শরীর লেপন করেন এবং দিব্যাঙ্গ রূপ পান অষ্টবক্র মুনি। সেই থেকেই এই জায়গার নাম বক্রেশ্বর। আজও বক্রেশ্বরে ৮ টি কুণ্ড আছে, যেখানে সারা বছর চলে উষ্ণ প্রস্রবণ। বিশ্বাস করা হয় সেখানে স্নান করলে মুক্তি মেলে নানা রোগ থেকে।