লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রকৃতির উত্তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ।তরজা গান ভালোই চলছে।বিজেপি তৃণমূল কেউ কম যাচ্ছে না।সবাই হুঙ্কার দিচ্ছে।কেউ বলছে ৪২ এ ৪২ তো কেউ বলছে ২৪ এ ২৪,তো কেউ আবার বলছে বাংলায় চায় ৩০ থেকে ৩৫ ! যেন মামার বাড়ির আবদার। চাইলেই পাওয়া যায়।রাজনৈতিক নেতারা যতই তর্জন গর্জন করুক না কেন ভোট তো দেবে জনগণ।জনতা জনার্দনের রায়ই তো শেষ কথা।তবে বলা বাহুল্য,এবারে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির লড়াই খুব একটা সহজ হবে না।২০১৯ আর ২০২৪ এক নয়।এই পাঁচ বছরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে।দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে রাজ্যে বন্ধ ১০০ দিনের কাজ।তাছাড়া ১০০ দিনের কাজ করেও মজুরি পায়নি বাংলার লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ আবাস যোজনার ঘর।তাই এবার শুধু ভাষণ বাজিতে বাংলার আপামর জনসাধারণের মন জয় করতে পারবে না বিজেপি।কাজে আসবে না মিথ্যা প্রতিশ্রুতি।তার ওপর বিজেপিকে এবার লড়তে হবে লক্ষীর ভান্ডার,কৃষক বন্ধু,কন্যাশ্রী,সবুজ সাথী,ঐক্যশ্রী,রুপশ্রীর মতো মমতা ব্যানার্জির বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে,যা মোটেও সহজ সাধ্য নয়।মানুষের মধ্যে এখন একটা বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়েছে যে,তৃণমূল ক্ষমতায় না থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে লক্ষ্মীর ভান্ডার,কন্যাশ্রী, রুপশ্রী,সবুজ সাথীর মতো সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প।কারণ মমতা ব্যানার্জি পরীক্ষিত।যা বলে তাই করে।তার প্রমাণ সদ্য হাতেনাতে পেয়েছে বাংলার লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ।কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি না দিলেও বাংলার লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের বকেয়া মজুরি মিটিয়েছে রাজ্যের মা মাটি মানুষের সরকার।কিন্তু বিজেপির কথার সাথে কাজের মিল মানুষ এখনও খুঁজে পায়নি।না ঢুকেছে জনগণের অ্যাকাউন্টে পনেরো লক্ষ করে টাকা,না হয়েছে বছর বছর ২ কোটি করে বেকারের চাকরি।সুইস ব্যাংক থেকে কালো টাকাও দেশে ফিরে আসেনি।উপরন্তু নোটবন্দীর নাম করে,আধার কার্ডের সঙ্গে প্যান কার্ড,ভোটার কার্ড, রেশন কার্ডের লিঙ্ক ,গ্যাসের বায়োমেট্রিক সহ একাধিক বিষয়ে বার বার মানুষকে লাইনে দাঁড় করাচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।তাই যতই তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হোক মানুষ কিন্তু সে সবে তত পাত্তা দিচ্ছেন না।সবাই নিজের নিয়েই ব্যস্ত।তার ওপর আবার ২০১৯ সালের আতঙ্ক মানুষকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।কেউই চাইছেন না ফিরে আসুক সেই সব অরাজকতার দিন,চোখ রাঙানি,হুমকি।এছাড়াও বুথ স্তরে বিজেপির মুখের বড় অভাব।সংগঠনও নড়বড়ে।তার ওপর আবার বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি ! সবকা সাথ,সবকা বিকাশ,সবকা বিশ্বাসের কথা বললেও বাস্তবে কিন্তু তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।সংখ্যালঘুদের সবার বিশ্বাস এখনও অর্জন করতে পারেনি বিজেপি।সংখ্যালঘুদের প্রতি বিজেপির বিরূপ মনোভাব ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলবেই,সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।তাই বিজেপি যতই লম্ফঝম্ফ করুক না কেন বাংলার মাটিতে লড়াই অত সহজ হবে না।বাংলার আপামর সাধারণ জনগণ বিভাজনের রাজনীতিকে কখনোই সমর্থন করে না। বৃথাই আস্ফালন বিজেপির।২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় জেতা ১৮ টা আসন আদৌ ধরে রাখতে পারবে কিনা সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে।
![](https://khaborsojasuji.com/wp-content/uploads/2024/04/1711597739513.jpg)