খবর সোজাসুজি

চোখে চোখ রেখে কথা বলে !!!
চোখে চোখ রেখে কথা বলে !!!

ইন্টারন্যাশনাল অ্যাথলেটিকসে সুযোগ মিললেও আর্থিক কারণে শ্রীলঙ্কা যাওয়া অনিশ্চিত বুল্টি রায়ের

বিদ্যুৎ ভৌমিক : অর্থই অনর্থের মূল।আবার অনেক সময় অর্থ মানুষকে উত্তরণের পথ দেখিয়ে দেয়।কোনও ক্ষেত্রে অর্থ না থাকলে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো যায় না ।সেখানে শুধু আক্ষেপ করা ছাড়া গতি নেই ।সেখানে অর্থ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পর্বত সমান বাধা হয়ে দাঁড়ায় ।তারকেশ্বরের দুঃস্থ অ্যাথলিট বুল্টি রায়ের কাছে এখন অর্থ শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলা যায়।সে কারণে আগামী দিনে তাঁর খেলার অঙ্গনে এই কঠিন বাধা তাঁকে ঘরে বাইরে জেরবার করে তুলেছে।অথচ হাতের কাছে এই সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে গেলে তাঁর মতো খেলোয়াড়ের বিরাট ক্ষতি।এমনকি তাঁর অ্যাথলিট জীবনের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাবে। তাঁর ঘরে কানাকড়ি সম্বল নেই ।তবুও তিনি খেলার মাঠে প্র্যাকটিসে কোন খামতি রাখছেন না ।আগামী ১৮ আগস্ট তাঁকে চেন্নাই পৌঁছে শ্রীলঙ্কার ফ্লাইট ধরতে হবে ।সেখানে ১৯ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার আসর বসছে ।ভারতের নির্বাচকমণ্ডলী পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে সর্বসাকুল্যে ২০ জনকে সিলেকসন করেছে।এ রাজ্য থেকে ৩ জন প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত হয়েছেন।তার মধ্যে তারকেশ্বরের অ্যাথলিট বুল্টি রায় স্বীয় ক্রীড়া চাতুর্যের বলে ভারতীয় দলে জায়গা পাকা করে নিয়েছেন।কিন্তু তাঁর যাওয়ার ব্যাপারে অর্থ তাঁকে প্রশ্ন চিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেও তিনি আশায় দিন গুনছেন। তিনি না পারছেন এগোতে, আবার পিছোতেও বুল্টি গররাজি ।এমনই কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ বুল্টি ।কিভাবে এই কঠিন সমস্যার সমাধান করা যায়, সে নিয়ে বুল্টি নাওয়া খাওয়া ভুলে যেতে বসেছেন।অজ পাড়া গাঁয়ের বুল্টির মতো অ্যাথলিটকে কে বা কারা স্পনসর করবে?তবে এলাকার সহৃদয় মানুষেরা বিগত দিনের তাঁর সাফল্যের কথা মনে রেখে এগিয়ে আসবেন,এই ভাবনায় ভাবিত অ্যাথলিট বুল্টি রায়।গত বছর ঠিক এই সময়ে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাস্টার্স অ্যাথলেটিকসে পাঁচ পাঁচটি স্বর্ণ পদক জয় করে ক্রীড়ামোদীদের তাক লাগিয়ে দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে,তার পায়ে খেলা আছে । কিন্তু শ্রীলঙ্কা যাওয়া ও খাওয়ার খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দরকার।এ টাকা কোথা থেকে আসবে?তা ভেবেই তিনি আকুল।মনে মনে তিনি নিজেকে প্রশ্ন করেন, তিনি তো বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে জবরদস্ত লড়াইয়ের সম্মুখীন হবেন।সেখানে তাঁর সাফল্য তো দেশের সাফল্য ।সেই বিদেশ বিভূমে সোনার পদক জিতলে দেশের সুনাম বাড়বে। তাঁর কথায়,”৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।আমরা তো দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবো।তাহলে খেলোয়াড়দের যাতায়াত ও খাওয়া দাওয়ার খরচ সরকার বহন করবে না কেন?এ ব্যাপারে ক্রীড়ামোদী রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার খেলোয়াড়দের কথা মনে রেখে আমাদের মতো গরীব খেলোয়াড়দের কথা ভাবলে ভালো হয়।কারণ আমার মতো অনেক অ্যাথলিটদের অর্থনৈতিক অবস্থা আশানুরূপ নয়।”সে কারণে বুল্টির আবেদন, খেলোয়াড়দের কথা মনে রেখে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দপ্তর বিষয়টি পর্যালোচনা করুক।যাতে করে যোগ্যতা অর্জন করেও শুধুমাত্র অর্থের অভাবে শ্রীলঙ্কা যাওয়া আটকে না যায় তাঁর।অ্যাথলিট বুল্টি রায়ের অভাবী সংসারে এমনই দৈন্যদশা যে নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মত অবস্থা। তাঁর স্বামী সন্তোষ রায় ট্রেনে হকারি করেন।তা থেকে যা অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়ে কোন ক্রমে সংসার চালাতে বেশ বেগ পেতে হয়।বুল্টির দুটি সন্তান। তাঁর ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচ জোগাতে হিমসিম খেতে হয় ।যে বাড়িতে বুল্টি বসবাস করেন সেটা ঠিক বাড়ি বলা চলে না।ঠিক যেন ঝুপড়ি।তাও আবার ভাড়া বাড়ি।বুল্টির নিজের উপায় বলতে, এখন বুল্টি চুক্তির ভিত্তিতে ছ’ মাসের জন্য হোমগার্ডের চাকরিতে যুক্ত।ছ’ মাসের পর চাকরি চলে গেলে তিনি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন?কি খাবেন? এও এক চিন্তা। এমতাবস্থায় আন্তর্জাতিক মাস্টার্স অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপ কম্পিটিশনে অংশ গ্রহণ করার জন্য রাহাখরচ নিয়েও আর এক চিন্তায় বুল্টি মগ্ন।এই খবর লেখার সময় পর্যন্ত কেউ তাঁকে অর্থ দিয়ে ভরসা যোগায় নি।তবুও বুল্টি রোজ তারকেশ্বর স্কুল মাঠে কোচ ছাড়া (বুল্টির কোচ শিবপ্রসাদ ধাড়া বর্তমানে প্রয়াত)গভীর অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে মনোনিবেশ করে চলেছেন । তিনি সাফল্য পেতে উন্মুখ । বুল্টি আশায় আছেন, এলাকার সহৃদয় মানুষেরা তাঁর পাশে এসে দাঁড়াবেন। তাঁর শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পথ সুগম করতে সহযোগিতা পাশে আবদ্ধ হবেন।তারকেশ্বরের বুল্টি রায়ের এলাকার মানুষের প্রতি অগাধ বিশ্বাস বা আস্থা।সেই দৃঢ় বিশ্বাস বুল্টি হারাতে নারাজ।কথায় বলে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু।সেই বিশ্বাসের ওপর ভর করে বুল্টি জাগ্রত আছেন।সেই বিশ্বাসেই বুল্টি রায় শ্রীলঙ্কা পাড়ি দেবেন !

Share this on social media

Facebook
Twitter
Email
WhatsApp
Telegram
Pinterest

Recent Posts

author-avatar
  • October 30, 2024

মাইক্রো ফিনান্স সংস্থার লোন নিয়ে চড়া সুদের চক্রে পড়ে সর্বসান্ত হচ্ছে গ্রাম বাংলার সাধারণ গরিব মানুষ।লোনের কিস্তি দিতে না পারলে বাড়ি বয়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মাইক্রো ফিনান্স সংস্থার কর্মীরা,অভিযোগ।রাত দশটা এগারোটার সময়েও এসে দরজায় কড়া নাড়ছে,অভিযোগ।আরও অভিযোগ,লোনের কিস্তি দিতে না পেরে মাইক্রো ফিনান্স সংস্থার কর্মীদের হুমকির ভয়ে অনেকেই ঘরছাড়া।আত্মীয় স্বজনের বাড়ি গিয়েও নিস্তার নেই ! সেখানেও হানা দিচ্ছে লোন আদায়কারীরা,দিচ্ছে হুমকি।লোন দেওয়ার সময় তাদের মোবাইল,টর্চ লাইট সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চড়া সুদে কিনতেও বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।লোনের কিস্তির টাকা পরে দেব বললেও রেহাই পাচ্ছে না গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া গরিব মানুষ।একটা লোন শোধ করতে গিয়ে নতুন করে আবারও লোন নিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।লোনের কিস্তি আদায়ের নামে এভাবে কি যখন তখন বাড়িতে এসে হুমকি দিতে পারে মাইক্রো ফিনান্স সংস্থার কর্মীরা,উঠছে প্রশ্ন।চাপে পড়ে লোনের টাকা দিতে না পেরে যদি কেউ সুইসাইড করে তাহলে তার দায়িত্ব মাইক্রো ফিনান্স সংস্থার কর্মীরা নেবে তো, উঠছে প্রশ্ন।

author-avatar
  • October 30, 2024

ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কতটা তা খতিয়ে দেখতে কৃষি মন্ত্রী ও পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে জেলায় গিয়ে সমীক্ষা তদারকির নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

author-avatar
  • October 30, 2024

আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে দিকে দিকে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।আবাস যোজনার সার্ভের কাজে যেন কোনো অস্বচ্ছতা না থাকে,সতর্ক বার্তা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের।

author-avatar
  • October 12, 2024

ধনেখালি ব্লকের মধ্যে অভিনবত্বের দিক থেকে আমাদের চোখে সেরা প্রতিমা দশঘরা স্কুল পাড়া দুর্গা পুজো কমিটির প্রতিমা।

author-avatar
  • October 12, 2024

বেপরোয়া বাইক চালকদের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত পথ চলতি সাধারণ মানুষজন